স্বদেশ ডেস্ক: রেস্তরাঁয় দরজা ঠেলে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই আপনাকে স্বাগত জানানো হল। দেখিয়ে দেওয়া হল কোথায় গিয়ে বসে খানাপিনা সারবেন। মুহূর্তের মধ্যেই দেখবেন একজন হাসি হাসি মুখে আপনার দিকে এগিয়ে আসছে। আপনার পছন্দসই খাবারের নামও লিখে নিচ্ছে তাঁরা। এরপর টেবিলে এল খাবার। আড্ডা দিতে দিতে রসনাতৃপ্তির মাঝে দেখবেন আবারও কেউ এসে জিজ্ঞাসা করছে খাবার ঠিক আছে তো? রেস্তরাঁয় খেতে গেলে এই পরিষেবা মোটামুটি সকলেই পেয়ে থাকেন। কিন্তু স্বাগত জানানো থেকে আপনার প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখার গুরুদায়িত্ব মূলত পালন করেন রেস্তরাঁয় কর্মরতরা। তবে এখানে মানুষ নন, আপনার পরিষেবার দিকে নজর রাখবে দুই যন্ত্রমানব। রান্না করা থেকে অতিথিদের পরিবেশন সব কাজই শক্ত হাতে সামলাচ্ছে রোবটেরা।
ওডড়শার ভুবনেশ্বরের চন্দ্রশেখরপুরের এই রেস্তরাঁয় ঢুকে এভাবেই চমকে যাচ্ছেন প্রায় সকলেই। গত বুধবারই এই রেস্তরাঁর উদ্বোধন হয়েছে। সম্পূর্ণ যন্ত্রমানব পরিচালিত রেস্তরাঁয় রয়েছে চম্পা এবং চামেলি নামে দুই রোবট। তারা এই রেস্তরাঁর সমস্ত দায়িত্ব সামলায়। রান্না যেমন করে তেমনই আবার অতিথি আপ্যায়নেও তাদের জুড়ি মেলা ভার। পরিবেশনের ক্ষেত্রেও আবার সমান পারদর্শী চম্পা-চামেলি। রেস্তরাঁর মালিক জিৎ বাসা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক বহুদিন আগে যন্ত্রমানব পরিচালিক রেস্তরাঁর কথা বলছিলেন। তাঁর কথামতো রেস্তরাঁর কাজ শুরু হয়। বুধবার পূর্ব ভারতের প্রথম যন্ত্রমানব পরিচালিত রেস্তরাঁর উদ্বোধন হল।” কেমন কাজ করছে চম্পা-চামেলি? রেস্তরাঁ মালিক বলেন, “ঠিক যেভাবে প্রোগ্রামিং করা হয়েছিল সেভাবেই কাজ করছে দুই রোবট। ওদেরও মনে হয় এই কাজ করতে মন্দ লাগছে না। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে খাবার-দাবার নিয়েও নানা টিপস দিচ্ছে রোবটরা। তাদের হাসি হাসি মুখ দেখে সকলে আনন্দ পাচ্ছে। আপাতত ওড়িয়া ভাষাতেই কথা বলে চম্পা-চামেলি। তবে তাদের পরবর্তীকালে আরও ভাষা শেখানো হবে।” রেস্তরাঁ মালিকের কথা অনুযায়ী চম্পা-চামেলির সবচেয়ে বড় ইউএসপি তারা কখনই ক্লান্ত হবে না। তাই রেস্তরাঁ খোলার সময়েও যেভাবে গ্রাহকরা পরিষেবা পাবেন, তেমনই আবার শেষের দিকে আসলেও তাড়াতাড়ি খাবার পাবেন সকলেই। তাই রেস্তরাঁয় খাবার অর্ডার দিয়ে বেশীক্ষণ বসেও থাকতে হচ্ছে না রসনাবিলাসীদের।
রোমাঞ্চকর পরিবেশে খাওয়া-দাওয়া সারতে এখন ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই। বাড়ির কচি-কাঁচাদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার ঠিকানাও হয়ে গিয়েছে এই রেস্তরাঁ। শিশুরাও রোবট চম্পা-চামেলিকে দেখে বেজায় খুশি। যন্ত্রমানবদের যত দেখছে, ততই অবাক হচ্ছে খুদেরা।